Shotyi bole Shotyi kichu nei :আপাতদৃষ্টিতে যা সত্যি বলে মনে হয়, তা কি আধও সত্যি? নাকি তার মধ্যে লুকিয়ে আছে মিথ্যে? তাই বোঝানো হয়েছে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নতুন ছবি সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই তে। ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কৌশিক গাঙ্গুলী, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, ঋত্বিক চক্রবর্তী,ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়, কৌশিক সেন,কাঞ্চন মল্লিক,অনির্বাণ চক্রবর্তী,অনন্যা চট্টোপাধ্যায়, রাহুল অরুণোদয়, অর্জুন চক্রবর্তী, সৌরসেনী মৈত্র, সুহোত্র মুখোপাধ্যায় ,কৌশিক কর এবং নুর ইসলাম।
যদি ছবি গল্পের কথায় আসা যায়, বিচারক ব্রজেশ্বরের বাড়িতে চলছে পার্টি। আমন্ত্রিত বেশ কিছু জন লোক। পার্টি চললেও বিচারকের মাথায় চলছে পরের দিনের কেসের হিয়ারিংয়ের চিন্তা। ভাই- দাদাকে খুন করেছে এরম একটি কেস। ছেলেটি খুন করেছে কি করেনি, তাই ভাবছেন তিনি শয়নে স্বপনে। মজার কথা, স্বপ্নের মধ্যেই তিনি দেখেন তার পরিচিত মানুষ জনেরা হয়ে গেছেন এক এক জন জুরি মেম্বার এবং তারাই নিজেদের মতামত জানাচ্ছেন এই কেসের নানা দিক নিয়ে । এই আলোচনায় ১১ জন ছেলেটির বিপক্ষে যায় কিন্তু ১ জন যায় পক্ষে। সেখান থেকেই ঘোরে গল্পের মোড়। মূলত পরিচালক বাসু চট্টোপাধ্যায়ের এক রুকা হুয়া ফয়সালা ছবি এবং সিডনি লুমেটের ১২ অ্যাংরি ম্যান ছবির অবলম্বনে তৈরি হয়েছে ছবির চিত্রনাট্য। যেখানে দেখানো হয়েছিল ১২ জন জুরি মেম্বারের মতামত নিয়ে এক রুদ্ধশ্বাস গল্প। তবে পরিচালক চারদেওয়ালের মধ্যে এই গল্প রাখেননি। ড্রিম সিকুয়েন্সের মাধ্য়মে কখনও চরিত্ররা গলফ কোর্সে তো কখনও তারা সমুদ্রে।
এই ছবির মূল ইতিবাচক দিক হলো অভিনেতাদের অভিনয়। শুধুমাত্র তার জন্যই এই ছবি চোখ বন্ধ করে দেখা যায়। কাকে ছেড়ে কার কথা বলা যায়, কৌশিক গাঙ্গুলী থেকে কৌশিক সেন, অনির্বাণ চক্রবর্তী থেকে ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়, সৌরসেনী থেকে সুহোত্র সবাই নিজের সেরাটা উজার করে দিয়েছেন ছবিতে। পাশাপাশি অনন্যা চট্টোপাধ্যায়, কাঞ্চন মল্লিক, রাহুল,অর্জুন ও পাল্লা দিয়ে সমানতালে অভিনয় করেছেন। তবে সকলকে ছাপিয়ে গিয়েছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী। যেন জলের মতো স্বচ্ছ তার অভিনয়। বিশেষ করে জঙ্গলের মধ্যে একটি দৃশ্যে তার অভিনয় দেখবার মতো। পাশাপাশি সমুদ্রে সৌরসেনী এবং সুহোত্রর অভিনয়ও নজর কাড়বে।
আরও পড়ুন- Aksay Kumar as Shiv:দেবাদিদেব মহাদেবের অবতারে ‘অক্ষয় কুমার’, আসছে নতুন ছবি ‘কানাপ্পা’
অভিনয়ের পাশাপাশি বলতে হবে সিনেমাটোগ্রাফির কথা। এই ছবির সিনেমাটোগ্রাফার প্রসেনজিত চৌধুরী। দুর্দান্ত কিছু শট নেওয়া হয়েছে এই ছবিতে। বিশেষ করে সমুদ্রের সিন এবং থিয়েটারের সিনগুলি বড়পর্দায় বেশ নজর কাড়বে।
অভিনয় এবং সিনেমাটোগ্রাফির পর বলতে হবে ছবির গানের কথা। এই ছবির সঙ্গীত পরিচালক অমিত চ্যাটার্জি। ছবিতে রাপূর্ণা ভট্টাচার্যের গলায় তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা’ গানটি যেন সত্যিই ছবির প্রতিফলক হয়ে ওঠে। এই গানটিই আবার কৌশিক চক্রবর্তীর গলায় শোনা যায় ছবির শেষে। তার গলাতেও বেশ সুন্দর লাগে গানটি। এছাড়াও ছবিতে রয়েছে একটি গজল,সেই গানটিও বেশ ভালোই।
এই ছবির নেতিবাচক দিক একটিই। পরমব্রত যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন, অর্থাৎ একজন সমকামীর চরিত্রে, সেই চরিত্রটি হয়ে ওঠার জন্য তিনি ১০০ শতাংশ দিয়েছেন এ কথা ঠিক, কিন্তু তার পরেও যেন আপাতদৃষ্টিতে কিছু হলেও খুঁত থেকে যায়। তবে ছবির অন্যান্য দিকের জন্য তা এক সময়ের পর ঢাকা পরে যায়। সবমিলিয়ে বলা যায়, এই ছবি সৃজিতের অন্যতম সেরা ছবি গুলির মধ্যে একটি।
রেটিং – ৮.৫/১০