‘আনন্দ’ (১৯৭১), ‘গুড্ডি’ (১৯৭১), ‘নামাক হারাম’ (১৯৭৩), ‘মিলি’ (১৯৭৫), ‘চুপকে চুপকে’ (১৯৭৫), ‘গোলমাল’ (১৯৭৮), ‘খুবসুরৎ’ (১৯৮০) সহ একাধিক বিখ্যাত চলচ্চিত্রের পরিচালনা করেছেন হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায় । ১৯২২ সালের আজকের দিনে হৃষীকেশ মুখার্জির জন্ম কলকাতায়। চার দশকেরও বেশি বিস্তৃত ক্যারিয়ারে ৪২টা ছবি বানান হৃষীকেশ। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমিস্ট্রি অনার্স পাশ করে কিছুকাল শিক্ষকতা করেন। হৃষীকেশ মুখার্জি তার বন্ধু মৃণাল সেন, তাপস সেন, সলিল চৌধুরী, ঋত্বিক ঘটকদের সাথে আড্ডা দিতেন দক্ষিণ কলকাতার ‘প্যারাডাইস ক্যাফে’-তে।
হৃষীকেশ মুখার্জি চল্লিশের দশকের শেষ দিকে নিউ থিয়েটার্সে কাজ শুরু করেন ক্যামেরামেন হিসেবে, তারপর সুবোধ মিত্র-র থেকে এডিটিং এর কাজ শিখে এডিটর হিসেবে কাজ করতে থাকেন। ১৯৫১ তে হৃষীকেশ মুখার্জি বোম্বে চলে যান বিমল রায়ের সাথে কাজ করার জন্য। বিমল রায় পরিচালিত ‘মা’ (১৯৫২), ‘দো বিঘা জমিন’ (১৯৫৩), ‘পরিনীতা’ (১৯৫৩), ‘বিরাজ বহু’ (১৯৫৪), ‘দেবদাস’ (১৯৫৫), সহ বেশ কিছু ছবির এডিটর হিসেবে কাজ করেন তিনি। হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়পরিচালিত এবং প্রযোজিত প্রথম ছবি ‘মুসাফির’ রিলিজ করে ১৯৫৭ তে, এই ছবির জন্য তিনি স্ক্রিপ্ট লেখেন ঋত্বিক ঘটকের সাথে।
হৃষীকেশ মুখার্জি ছবি পরিচালনার পাশাপাশি এডিটিং এর কাজ চালিয়ে যান, ‘মধুমতী’ (১৯৫৮), ‘গঙ্গা যমুনা’ (১৯৬১), ‘মেরে হামদম মেরে দোস্ত’ (১৯৬৮), ‘দাস্তাক’ (১৯৭০), ‘প্রফেসর প্যায়ারেলাল’ (১৯৮১) ও ‘কুলি’-র (১৯৮৩) মতো জনপ্রিয় ছবির। টেলিভিশনের জন্য হৃষীকেশ মুখার্জি ‘হাম হিন্দুস্থানী’ (১৯৮৬), ‘তালাশ’ (১৯৯২), ‘ধুপ ছাও’ এবং আরো কিছু ধারাবাহিক বানান। ওনার পরিচালিত শেষ ছবি ‘ঝুট বোলে কাওয়া কাটে’ ১৯৯৮ তে মুক্তি পায়। পরিচালনা ও এডিটিং এর জন্য একাধিকবার ‘National Film Awards’, ‘Filmfare Awards’ এবং ‘Kerala State Film Awards’ বিজয়ী হন এই বর্ষীয়ান পরিচালক।
হৃষীকেশ মুখার্জি ওনার চলচ্চিত্র পরিচালনা জীবনে, দিলীপ কুমার, রাজ কাপুর, সুনীল দত্ত, সঞ্জীব কুমার, রাজেশ খান্না-র মতো বিখ্যাত অভিনেতাদের নিয়ে কাজ করেছেন, সেরকমই নতুন অভিনেতাদের জায়গা করে দিয়েছেন যারা পরবর্তীকালে অনেক খ্যাতি লাভ করেছেন। নতুনদের নিয়ে কাজের ক্ষেত্রে বিশেষেভাবে উল্লেখ করা দরকার, ‘আনন্দ’ ছবিতে ডাক্তারের চরিত্রে অমিতাভ বচ্চনকে কাষ্ট করার কথা বা ‘নামাক হারাম’ ছবিতে রাজেশ খান্না ও অমিতাভ বচ্চনকে একে অপরের বিরুদ্ধে কাষ্ট করার ক্ষেত্রে। ‘গুড্ডি’র চরিত্র দিয়ে হিন্দী ছবিতে কাজ শুরু করেন জয়া (ভাদুরী) বচ্চন। হৃষীকেশ মুখার্জি ১৯৯৯ তে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পান, ২০০১ সালে পান পদ্মবিভূষণ পুরস্কার।